অনলাইন ডেস্কঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ দেশের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপের জন্য একটি অপরিহার্য নথি জন্ম নিবন্ধন সনদ। জন্মসূত্রে একজন ব্যক্তির নাগরিকত্বের পরিচয় ধারণ করে এই জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রটি। তাই শিশু জন্মের পর পরই অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের পাশাপাশি বাবা-মায়ের উচিত সরকারি খাতায় শিশুর নামটি লিপিবদ্ধ করানো। পূর্বে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অফলাইনে হলেও বর্তমানে সরকারি ডাটাবেসে নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষণের স্বার্থে অনলাইনের মাধ্যমে তথ্যগুলো নেয়া হচ্ছে। চলুন জেনে নিই, জন্ম নিবন্ধন করার সর্বাধুনিক প্রক্রিয়াঃ
নিবন্ধনের সরকারী ফিসঃ বাংলাদেশ
-জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫দিন পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন একেবারে ফ্রি।
-জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫দিন পর হতে ৫বছর পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম বা নিবন্ধন (সাকুল্যে) দেশে ২৫টাকা ও বিদেশে ১মার্কিন ডলার।
-জন্ম বা মৃত্যুর ৫বছর পর কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন সাকুল্যে দেশে ৫০ টাকা ও বিদেশে ১মার্কিন ডলার।
-জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন ফি দেশে ১০০টাকা ও বিদেশে ২মার্কিন ডলার।
-জন্ম তারিখ ব্যতীত নাম,পিতার নাম,মাতার নাম,ঠিকানা ইত্যাদি অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি দেশে ৫০ টাকা ও বিদেশে ১মার্কিন ডলার।
-বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনের পর সনদের কপি সরবরাহ দেশে বিনা ফিসে ও বিদেশে বিনা ফিসে।
-বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় সনদের নকল সরবরাহ দেশে ৫০টাকা ও বিদেশে ১মার্কিন ডলার।
নং ৪৬.০০.০০০০.১১৮.২২.০০১.১৭.৭৬০ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা বাংলাদেশ
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রথমেই কিছু কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন বয়সের লোকদের জন্য কাগজপত্রেও ভিন্নতা রয়েছে।
শিশুদের জন্ম নিবন্ধকরণে জন্মের পর প্রথম ৪৫ দিনের মধ্যে যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন তা হলো-
১। অনলাইনে আবেদনকৃত ফর্মের প্রিন্ট কপি।
২। শিশুর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৩। শিশুর ইপিআই (এক্সপান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন) টিকা কার্ড কিংবা ইপিআই কর্মীর নিকট থেকে প্রত্যয়নপত্র
৪। শিশুর জন্মস্থান ও জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে শিশুর জন্ম সনদের সত্যায়িত অনুলিপি বা বার্থ এটেনডেন্ট-এর প্রত্যয়ন পত্র বা শিশুর জন্ম সংক্রান্ত অন্য কোনো প্রমাণ পত্র।
৫। বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা-মার অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ।
৬। বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র।
৭। শিশুর যে কোন একজন অভিভাবকের কর পরিশোধের প্রমাণ।
৪৫ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে উপরোক্ত ৪ নং বাদে বাকি সব কাগজপত্রই লাগবে।
৫ বছরের বেশি শিশু অথবা যে কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে-
১। অনলাইনে আবেদনকৃত ফর্মের প্রিন্ট কপি।
২। শিশুর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৩। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল স্বীকৃত এমবিবিএস বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রিধারী চিকিৎসক-এর নিকট থেকে প্রত্যয়ন পত্র।
৪। পিএসসি(প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী), জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) বা এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট)।
৫। বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা-মায়ের অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ।
৬। বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র।
৭। জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের সাপেক্ষে বাবা/মা/দাদা/দাদির স্বনামে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখিত জায়গার বিপরীতে নবায়নকৃত কর প্রদানের প্রমাণপত্র
অথবা, নদীভাঙন/কোনো কারণে স্থায়ী ঠিকানা বিলুপ্ত হলে জমি/বাড়ি ক্রয়ের দলিল, খাজনা ও কর প্রদানের রশিদ।
অথবা, বসবাসের স্থান প্রমাণের সাপেক্ষে পৌরসভার চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র।
জন্ম নিবন্ধন সনদ-এর জন্য আবেদনের সনদ অনলাইন প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ এই কার্যক্রমটিকে আরও গতিশীল ও ঝামেলাহীন করেছে। এখন আবেদন জমা দেয়ার পরের প্রক্রিয়াটি আরও নিরবচ্ছিন্ন করা প্রয়োজন। গ্রাহকদের অনেকেই জন্ম নিবন্ধন ফি এবং সনদ প্রাপ্তি নিয়ে ভোগান্তির কথা ব্যক্ত করছেন। এই সমস্যা নিরসনে ব্যাক-অফিসে কারিগরি দিক থেকে দক্ষ লোকবল এবং নতুন-পুরাতন জন্ম নিবন্ধনগুলোর প্রক্রিয়াকরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। ইতোমধ্যে জন্ম নিবন্ধিত নাগরিকদের পুনরায় অনলাইনে নিবন্ধন করার বিষয়টি ব্যবস্থাপনায় অকর্মদক্ষতা প্রকাশ করছে, অব্যবস্থাপনা ছড়িয়ে পড়েছে। ডিজিটাল- অনলাইনে আবেদন করে যাচাই-বাছাইয়ের সরকারী ফিস সহ নির্দিষ্ট কার্যদিবস পর অনলাইন থেকেই সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত জন্ম নিবন্ধন প্রাপ্তিই দেশকে চূড়ান্তভাবে ডিজিটালকরণ করতে পারে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।